শুক্রবার, ২৭ আগস্ট, ২০২১

সময়

জলের মত বয়ে গেছে সময়
স্বচ্ছ কাচের নীল বয়ামে রেখে গেছে ছাপ
যত চিহ্ন, দাগ, রক্তের ছোপ সব একই 
একই বিস্মরণের পথ ধরে
সাজিয়ে গুছিয়ে রয়ে গেছে থরে থরে।

ধোঁয়ার মত উড়ে গেছে দিন
রাখেনি খোলা হাওয়ার ধূলায় ধুসর
পান্ডুলিপি- নোনা ধরা সবুজ দেয়ালের ওপারে
আসেনি রাঙা রাজকন্যা 
পৃথিবীর পুরনো পথের রেখা ধরে।

আগুনের তাপে পুড়ে গেছে সব রাত
যেখানে পোড়া কয়লার স্তুপের নীচে
চাপা পড়ে গেছে বিপ্লবের লাখো কোটি হাত
যায়নি কোথাও তারা
ক্লান্তি নিবিড় মৃত নক্ষত্রে রয়েছে পড়ে।


সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২০

জীবনের ঘ্যাঁচকা কল

আমরা শুধু যাই, আবার শুধু আসি
পথের মধ্যে ঘুরপ্যাচালে হয়তো একটু বসি
আমাদের নাই সময়, আমাদের ভীষণ তাড়া
এই জীবনের ঘ্যাচকা কলে আমরা তবু খাড়া।

বন বাদাড়ে যাইনা মোটেই, আমাদের খুব ভয়
মাছের মত সাঁতরে যেতে ইচ্ছে ভীষণ হয়
পাখির মত থাকতো যদি এক জোড়া ডানা
চলে যেতাম বহুদূরে পেরিয়ে সব মানা।

যাচ্ছি কোথায়, কোথায় যাবো, এলাম কোথা থেকে
প্রশ্নগুলো মাথার ভিতর বসত বেশ জেকে
এই শরীরের নাট বল্টু হচ্ছে কেন ঢিলে
তবে কি আসলাম শুধুই যাবো বলে?

খাই দাই ঘুরি ফিরি চলছে জীবন বেশ
উপায় তো নেই জানার কোন কখন হবে শেষ
মারামারি ঝগড়া ঝাঁটি আমরা তারপরেও করি
কোনকিছুই না জেনে নিজেদের কি এক হনু মনে করি।

এই জগতের কোন কিছুই আমাদের তো নয়
ভুল করেই এলাম কিনা মাঝে মাঝে মনে হয়
কি আছে এর পরে নাকি এইখানেই শেষ
এসব ভাবনা বাদ দিলে কিন্তু জীবনটা বেশ।




আত্মহননের কাব্য

যাওয়ার ভেতরেও একধরনের ফিরে আসা আছে
আছে অক্ষয় অন্ধকার রক্তিম আলোর শিখায়
আমাদের যত প্রেম, গান, রোদ ভালোবাসা
সব ঢেকে আছে নিষ্ঠুর পাশবিকতার ক্রুর ছায়ায়

উচ্চবিত্ত বিলাসবহুল নাগরিক যন্ত্রণার মাঝে
কোথাও একটা খেটে খাওয়া গ্রামের নারির সুর বাজে
নিঃসঙ্গ একলা কোথাও মাতাল হওয়ার স্বাদে
শত বছরের সংক্রামক নিঃসঙ্গতা নির্ভার হয়ে কাদে।

তাই আমরা এই সতত বিপরীত স্রোতের আরো বিপরীতে হেঁটে
চলে গিয়েছিলাম বহু বহু দূর - দিকচিহ্নহীন রাজপথে
আমাদের বিক্রি করে দিয়েছিল আমাদেরই ক্লান্ত ভ্রষ্ট বন্ধুরা
শত্রুর দূর্গের পরিখায় মুখ ডুবিয়ে আমরা আত্মহননের কাব্য লিখেছিলাম।

মঙ্গলবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৮

হাজার মাইল দূরে

না কেউ ছিল, না কেউ আছে
যে তোমার মত ভালোবাসে।
তুমি ফিরে এসো প্রিয় আমার জীবনে।
যত পথ হেটে গেছি
এই আলো ঝলমলে শহরে
ততই তোমার প্রিয় মুখ পড়ে মনে।
তারাজ্বলা রাত কেটে গেছে
প্রিয়তমা তোমার বিহনে
তুমি আসবে কবে ফিরে এই হৃদয়ে
এই মনে এই হৃদয়ে
এই মনের গোপন বাগানে
তুমি ফুল হয়ে ফুটবে কোন শুভক্ষনে।


('500 Miles' গানটিকে বাংলা ভাষায় গাওয়ার চেষ্টা থেকে পাওয়া)

বৃহস্পতিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

আমার ব্যক্তিগত অন্ধকার

আমার পেছনে ছায়ার মত একটা কালো অন্ধকার 
অনেক তীব্র আলো এবং রৌদ্রক্লান্ত দিন পার করেও
সে আবার ফিরে আসে তার জায়গায়।
নক্ষত্রের তেজ কিংবা মানুষের ব্যবহারিক অভিজ্ঞান,
এই কঠিন ও জটিল অন্ধকারের পায়নি সন্ধান।
 শুধু আমি ও আমার মত কয়েকজন সেই অন্ধকারের
থেকে পালিয়ে যাইনি - তাই আমাদের
পোষ মানা বেড়ালের মত, এই পৃথিবীর জমে থাকা অন্ধকার যত
সন্তর্পণে আমাদের গায়ে লেগে থাকে।
মানুষের চেনা পৃথিবী ছাড়া আরেক যে পৃথিবী আছে
যেখানে আলো এবং অন্ধকার অনেকটাই মিশে গেছে,
এই পৃথিবীর থেকে মুক্ত পাখির ডানার মত
যেখানে উড়ে বেড়ায় অন্ধকার
যেখানে নেই কোন নাম নিশানা
ভাষা, বিজ্ঞান কিংবা সভ্যতার,
সেখানেই কি জন্ম, আমার ঠিক পেছনে তাকালেই
সেই অজর, অমর, অবিভক্ত অন্ধকার।
হয়তো আমাকে নিয়েই যাবে এই গাছ, মাটি, ফুল
মেঘ, ঝড়, বৃষ্টি ভেঙে
জীবনের মত চঞ্চল হয়ে, মৃত্যুর মত অমোঘ ঠিকানায়।
তার আগেই আমি আমার ব্যক্তিগত অন্ধকার থেকে
কয়েক টুকরো ছড়িয়ে দিতে চাই
এই ভীড়ে চাপা শহরের রাস্তায় কিংবা
মরে যাওয়া গ্রামের পুকুর কিংবা ডোবায়
একটি গানের কথায়, সুরে কিংবা একটি বিপ্লবী কবিতায়,
দুর্বোধ্য কোন এক সিনেমার নায়িকার চোখের ভাষায়।

রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

এই সময়

ফ্যান্টাসির ভিতর বাস করি দিন ও রাত
কানাগলির ভিতর থেকে নি:শ্বাসের চিৎকার ভেসে আসে
স্মরনকালের সেরা বাতাসের তেজ আসে
বিকেল ভেঙেচুরে হয়ে যায় জলপ্রপাত।
যেখানে নদী ছিল পথরেখার মত স্পষ্ট
যেখানে প্রাণের ভ্রূণ ছিল অগনণ
সেই সরল ও উর্বরা জীবনের দিকে যেতে
গোপন ও অনৈতিক স্বপ্ন দেখে মন।
সারি সারি বেঈমান বিক্ষোভের ভীড়ে
আর বক্তৃতামালার অপব্যবহারে
কেমন একটা পচা ঘ্রাণ ভেসে আসে
টের পাই ক্ষত ফুটে আছে সমাজের বুকচিরে।

বেনামী ১

যেদিন ধরা পড়ে যাবে তুমি এই অসীম শুন্য আকাশের ভেতর
হাওয়া বাতাস ভেঙে জলরঙ মেঘে ভেসে
বলবেনা কেউ কিভাবে কতটা স্বপ্ন দেখার ভিতর বিষ মিশে আছে